দিনটা ছিল শুক্রবার। স্কুলে যাওয়ার আগ্রহ সেদিন ছিল একটু বেশি। কারণ, সেদিন ছিল আমদের স্কুল থেকে বেড়াতে যাওয়ার দিন। প্রথমবার আমি শিক্ষক শিক্ষিকা এবং বন্ধুদের সাথে একটি ঐতিহ্যপূর্ন জায়গা- বিষ্ণুপুরে (Bishnupur) দু’দিনের জন্য ভ্রমণে গিয়েছিলাম।
জায়গাটা বাঁকুড়া (Bankura) জেলায়। সেখানে অনেক সুন্দর সুন্দর মন্দির আছে। আর সেগুলি পোড়ামাটির তৈরি। সেইজন্যই ঐ শহরটিকে পোড়ামাটির শহর বলা হয়। আমরা ঐ শহরে পৌঁছনোর পর হোটেলে ব্যাগ রেখে বেরিয়ে পড়লাম তিনটে মন্দির দেখতে। রাসমঞ্চ, শ্যামরাই এবং জোড়বাংলা।
মন্দিরের ভিতর ও বাইরে পোড়ামাটির অসাধারণ কারুকার্য দেখে মন ভরে গিয়েছিল। প্রত্যেক মন্দিরের নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে।
তার মধ্যে শ্যামরাই মন্দিরটি আমার সবথেকে ভাল লেগেছে। কারণ, ওই মন্দিরে পোড়ামাটির নিখুঁত কারুকাজের মধ্য দিয়ে রামায়ন ও মহাভারতের কাব্যকে তুলে ধরা হয়েছে।
সব মন্দিরের চারপাশে সবুজ গাছপালা থাকায় পরিবেশটা আরও বেশি সুন্দর হয়ে উঠেছে।
বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কথা বলতে গেলে বড় বড় শাল গাছের কথা আগেই মনে পড়ে। আর তার সাথে লাল মাটি। লালমাটির পথের দুই ধারে গাছ আর তার সঙ্গে পোড়ামাটির মন্দিরগুলিকে দেখতে খুব সুন্দর লেগেছিল। সেদিনের খুঁটিনাটি জেনে আমরা হোটেলের ঘরে ফিরে এসেছিলাম সন্ধ্যার মধ্যেই।
পরের দিন সকালে জলখাবার খেয়ে বেরিয়ে পড়েছিলাম পাচমুরা গ্রামের (Pachmura village) উদ্দেশ্যে। গ্রামটি আসলে আর্ট হাব। সেখানে আমরা মাটির পুতুল বানালাম ও ওখানকার শিল্পীদের কাছ থেকে শিখে নিলাম বিখ্যাত ঘোড়া বানানো।
ওখান থেকে গেলাম লালমাটির বা পোড়ামাটির হাটে। সেখানে শিল্পীদের তৈরি সুন্দর সুন্দর জিনিষ দেখে আমরা খুব খুশি। বাড়ির জন্য কিছু জিনিষও কিনেছিলাম।
এই ভাবে আমাদের দুটো দিন আনন্দের সাথে কেটে গিয়েছিল। শুধু আনন্দ নয়, অনেক কিছু শিখেওছিলাম।