একে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা। তার ওপর ভোর রাত থেকেই উঠে পড়া। হোটেলের বাইরে গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।
ডেস্টিনেশন টাইগার হিল।
সেখানে গিয়েও কি রেহাই আছে! যেখানে গাড়ি থামল, সেখান থেকে খাড়া পথে হেঁটে অনেকটা পথ। যেন সুরুচি সঙ্ঘর পুজোর ঠাকুর দেখার ভীড়, আর লাইন। ঠেলাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি। ভোর বেলায় পিলপিল করে এত লোক কোত্থেকে যে আসে!
এত কান্ড করেও কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার নিশ্চয়তা নেই। ফিরে আসা সে আরেক ঝামেলা। এসব যদি এড়াতে চান, চলে আসুন চটকপুরে। টাইগার হিল থেকে যেমন সূর্যোদয় বা কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখবেন, এখান থেকেও তেমনই দেখবেন। তবে ওই ভিড়, ট্রাফিক জ্যামের চক্করে পড়তে হবে না। একেবারে নিরিবিলিতে একটা সুন্দর সকাল আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।
যাওয়া-আসার তেমন ঝামেলা নেই। দার্জিলিং যেমন, এটাও তেমনই। শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ৭৫ কিলোমিটার। যাওয়ার অনেকগুলো রাস্তা আছে। থাকারও বেশ কয়েকটা ঠিকানা আছে। সরকারি বাংলোতেও থাকতে পারেন। আবার হোম স্টে-তেও থাকতে পারেন।
যাওয়ার পথটা অসাধারণ। দু’পাশে ঘন জঙ্গল। চোখের সামনে মেঘ বেড়াচ্ছে। তার মাঝ দিয়ে আপনার
গাড়ি এগিয়ে চলেছে। একটা ছবির মতো সুন্দর গ্রাম। সবমিলিয়ে বড়জোর একশো পরিবারের বাস।
নিরিবিলি, শুনশান একটা পাহাড়ি গ্রাম। নাম না জানা কত পাখির ডাক, কত অচেনা গাছের মিছিল। এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা দেয় নানা চেহারায়। মাঝে মাঝে পাল্টে যায় আকাশের রঙ। এত রহস্য, এত রোমাঞ্চ, আপনাকে দু’দন্ড শান্তি দিয়ে যাবে।
ইচ্ছে মতো বেরিয়ে পড়ুন জঙ্গলে। তেমন হারিয়ে যাওয়ার ভয় নেই। যদি মনে হয়, কাউকে সঙ্গে চাই, হোম স্টে-তে বললেই হবে। গাইড ঠিক রাস্তা চিনিয়ে নিয়ে যাবে। ছোট খাটো একটা ট্রেকিং হয়ে যেতে পারে।
যেখানে ধকল তেমন নেই, কিন্তু রোমাঞ্চ আগাগোড়াই আছে। বর্ষার সময়টা এড়িয়ে চলাই ভাল। জুলাই, আগস্ট বাদ দিলে বাকি দশ মাস তো পড়েই রইল। খামোখা দার্জিলিং-এর ট্রাফিক জ্যাম বাড়িয়ে লাভ কী? আপনার ঠিকানা হয়ে উঠুক এই সুন্দর পাহাড়ি গ্রাম।