আমাকে যদি দুইটি বিষয়র মধ্যে পছন্দ করতে বলা হয়, যেমন – হয় আপনার এক বছরের জন্য বিনামূল্যে শপিং এর সুযোগ অথবা ১ মাসের জন্য পছন্দের কিছু জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ, আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি বিনা কোনো চিন্তা ভাবনায় আমি ঘুরতে যাওয়া বেছে নিব। ঘুরতে যাওয়া আমার কাছে যাদুর মত মনে হয়। সমস্ত ক্লান্তি, খারাপ লাগা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা দূর করে দিতে কোথাও ঘুরতে যাওয়াই যেন যথেষ্ট। শেষবার ভ্রমণে আমি রাতারগুল (ratargul) গিয়েছিলাম। সিলেট (sylhet) শহর থেকে এর দূরত্ব ২৬ কিলোমিটার। ‘রাতার-গুল’ (ratargul) এই নামটা এসেছে সেখানকার গাছের নাম থেকে। সিলেটের স্থানীয় ভাষায় মুর্তা বা পাটি গাছ “রাতা গাছ” নামে পরিচিত। সেই রাতা গাছের নামানুসারে এ বনের নাম রাতার-গুল। রাতার-গুল বা রাতার-গুল সোয়াম্প ফরেস্ট (ratargul swamp forest) বাংলাদেশের একমাত্র মিঠাপানির জলা-বন এবং বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, যা সিলেটের (sylhet) গোয়াইনঘাটে অবস্থিত। বনের আয়তন ৩,৩২৫.৬১ একর, আর এর মধ্যে ৫০৪ একর বনকে ১৯৭৩ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও ২০৪.২৫ হেক্টর বনভূমিকে ৩১ মে, ২০১৫ তারিখে বাংলাদেশের বন অধিদপ্তর বিশেষ জীব-বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা ঘোষণা করেছে। এটি পৃথিবীর মাত্র কয়েকটি জলা-বনের মধ্যে অন্যতম একটি। এই বনকে বাংলাদেশ সরকারের বনবিভাগের অধীনে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এখানে বর্ষাকালে গেলে বেশি উপভোগ করা যায়। তাই আমরাও বর্ষার মাঝামাঝি সময়ে চলে গেলাম।
জলে দাঁড়িয়ে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে বিভিন্ন সময়, বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এখানে ভিড় করেন পর্যটকগণ। বনের ভিতর ভ্রমণ করতে দরকার হয় নৌকার, তবে সেগুলো হতে হয় ডিঙি নৌকা। ডিঙিতে চড়ে বনের ভিতর ঘুরতে ঘুরতে দেখা যায় প্রকৃতির রূপ-সুধা। তবে বনে ভ্রমণ করতে অনুমতি নিতে হয় রাতার-গুল (ratargul) বন বিট অফিস থেকে।