পতেঙ্গায় একটি সন্ধ্যা ……

0
285
আপনি কখনো সমুদ্রের পারে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় বা সূর্যাস্ত দেখেছেন? চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত পতেঙ্গা (Patenga)। এটি বন্দরনগরীর একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, যা কর্ণফুলী নদীর মোহনায় অবস্থিত। ৫ কিলোমিটারের এই সমুদ্র বন্দরকে আধুনিক ও বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করার লক্ষে কাজ করা হচ্ছে। শীতকাল কিন্তু ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে সমুদ্রের আসে পাশে। এই শীতের মৌসুমেই ঘুরে আসতে পারেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে , উপভোগ করে আসতে পারেন এই সমুদ্র সৈকতের নয়নাভিরাম দৃশ্য। জোয়ারের সময় ঢেউয়ের আছড়ে পড়া এক নয়নাভিরাম দৃশ্য সৃষ্টি করে। 

এখানে সন্ধ্যার দিকে সূর্যাস্তের দৃশ্য মনকে আরো বেশি পুলকিত করবে। সবচেয়ে ভালো লাগবে সন্ধ্যার পরিবেশ। সুতরাং থাকতে পারেন সন্ধ্যা পর্যন্ত। প্রচুর লোকের সমাগম হয় সেখানে। সমুদ্র তীরে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে আছে সী বাইক ও ঘোড়া। বিকেলের দিকে মন চাইলে পানিতে নেমে আনন্দের মাত্রা আরও বাড়াতে পারেন। সেই সাথে আছে স্পিডবোড কিংবা কাঠের তৈরি নৌকা ওঠার সুযোগও। জাহাজ তো আছেই সাথে মাথার উপর প্লেন ও উরে যেতে দেখবেন কারন পাশেই শাহ আমানত (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।  

পতেঙ্গা (Patenga) সৈকতের প্রস্থ খুব বেশি নয় তবে এখানে সমুদ্রে সাঁতার কাটা ঝুঁকিপূর্ণ।  সমুদ্র সৈকত-জুড়ে ভাঙ্গন ঠেকাতে কংক্রিটের দেয়াল এবং বড় পাথরের খণ্ড রাখা হয়েছে।  নব্বইয়ের দশকে সৈকতের আশেপাশে বেশকিছু রেস্টুরেন্ট এবং খাবারের দোকান স্থাপিত হয়েছে।  সৈকতে বাতির ব্যবস্থা করায় রাতের বেলা ভ্রমণকারী পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। শহর থেকে বিক্রেতারা তাদের আইসক্রিম, কোমল পানীয় এবং খাবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে আগত পর্যটকদের নিকট বিক্রি করে। স্থানীয় লোকজনের মতে, পতেঙ্গা খুব স্বল্প ব্যয়ে সুস্বাদু খাবারের জন্য সেরা জায়গা। খাবারের স্ট্যান্ডগুলির জনপ্রিয় খাবারগুলির মধ্যে একটি হল ভাজা, মশলাদার কাদা মাটির কাঁকড়া। একটি ছোট প্লেট দিয়ে পরিবেশন করা হয় যা কুচি-কুচি শসা এবং পেঁয়াজ দিয়ে সজ্জিত থাকে।  সন্ধ্যায় সৈকতে একটি সুন্দর শীতল পরিবেশ থাকে এবং লোকেরা এই শান্ত বাতাস উপভোগ করতে আসে। কেনাকাটার জন্য পাশেই বার্মিজ মার্কেট রয়েছে । 

যদিও সমুদ্র সৈকত দেখে আপনার ফিরতে ইচ্ছে করবে না হয়তো। কিন্তু শাহ আমানত (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-গামী রাস্তার মুখে অবস্থিত বাটার ফ্লাই পার্ক দর্শন করতে ভুলবেন না। বিভিন্ন ধরনের প্রজাপতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাবেন সেখানে। পার্কটিতে ৭০ প্রজাতির প্রায় ১০০০ এর বেশি প্রজাপতি রয়েছে। সকালের দিকে এসব প্রজাপতির দেখা মেলে ।

ভ্রমণে যে নেশা রয়েছে তা শুধুমাত্র ভ্রমণ পিপাসুরাই জানে । কখনো সামুদ্র , কখনো পাহাড় কখনো বা জঙ্গলে এ প্রকৃতির টানে। ভ্রমণ পিপাসুদের সাথে আড্ডা দিয়ে ও খুব ভাল লাগে কারণ বিভিন্ন ভ্রমণের গল্প শুনিয়ে তারা তৃপ্তি পায় আর সেগুলো শুনতে আপনার ও অবশ্যই ভাল লাগবে। যদি আপনার সঙ্গী ভ্রমণে উৎসাহী হয় তাহলে নিশ্চিত আপনি অনেক ভাগ্যবান/ ভাগ্যবতী। সমুদ্রের পারে দাঁড়িয়ে একসাথে সূর্যাস্ত দেখা টা সত্যিই অনেক উপভোগ করার মতো একটা বিষয় হবে। পতেঙ্গায় (Patenga) একটি সন্ধ্যা কাটানোর পরে যদি কেউ আপনাকে জিজ্ঞাসা করে আপনার সমুদ্র পছন্দ কিনা আমি নিশ্চিত আপনি এক বাক্যে হ্যাঁ বলে দিবেন। সৌন্দর্য সবাই উপভোগ করতে পারে না। সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য যেমন চোখ প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন উপভোগ করার ইচ্ছা। আজ কাল শোনা যায়  অনেকে ডিপ্রেশনে থাকে। আমি ভেবে পাই না ভ্রমণের মত উপভোগ্য একটি ব্যাপার পৃথিবীতে থাকার পরেও কিভাবে মানুষ ডিপ্রেশনে চলে যায় ।    

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here