সেবার এক ভয়ংকর কান্ড হলো। বড় আপার বিয়ের পরে যখন তারা হানিমুনে যাওয়ার প্লানিং করছিলেন তখন তার ননদের ছেলে শুভ তাদের সাথে ঘুরতে যাবে বলে কান্না করে সারা বাড়ি মাথায় তুলে নিল। বয়স তখন ৪ হবে ওর। কেউ বাকি রইল না বোঝাতে কিন্তু সে কারো কথা শুনবে না সে ঘুরতে যাবে আপার সাথে। তাকে তো আর একা ছাড়া যায় না। বড় আপা বলল তাহলে আমার বোনটিকে আর রেখে যাই কেন। প্রথমে যাওয়ার কথা ছিল কক্সবাজার কিন্তু যেহেতু এখন অনেকে যাচ্ছি তাই সিদ্ধান্ত হল সিলেট চা বাগানে যাব। মনে মনে তো খুশিতে আটখানা কিন্তু আপার মেজাজ খুব খারাপ কিন্তু কি আর করা নতুন বউ কাউকে কিছু বলতেও পারছে না।
সিলেটের মালনীছড়া চা বাগানে ভ্রমণ (Malnicherra Tea Estate)! ব্যাগ গোছাতে গোছাতে ছবি তোলার কতো শত পোজ ভেবে রেখে দিয়েছি। আমরা বিকেলে রওনা দেবো বলে ড্রাইভার কে বলে রাখলেন ভাইয়া। কিন্তু বের হতে হতে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে এলো। রাত ৮ টায় রওনা দিলাম। সময় লাগবে প্রায় ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা। কিছু দূর এসে ভাইয়া কে জিজ্ঞাসা করলাম আচ্ছা ভাইয়া মালনীছড়া চা বাগানের বিশেষত্ব কি?
ভাইয়া হাসলেন, তারপর বলতে শুরু করলেন- “সিলেট (sylhet) সদর উপজেলায় ইংরেজ হার্ডসন সাহেবের হাত ধরে ১৮৫৪ সালে ১৫০০ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয় উপমহাদেশের বৃহত্তম এবং সর্বপ্রথম চা বাগান মালনীছড়া(malnicherra tea estate)। বাগানটি বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে বেসরকারি তত্ত্বাবধানে। ভ্রমনবিলাসী মানুষের কাছে আনন্দ ভ্রমণ কিংবা উচ্ছল সময় কাটানোর প্রথম পছন্দের স্থান হলো মালনীছড়া চা বাগান। সিলেট (sylhet) শহরের বেশ কাছাকাছি হওয়ায় যাওয়া নিয়ে তেমন ঝামেলা নেই তাই এখানে প্রতিদিনই পর্যটকের ভিড় জমে।
রাতের ভ্রমণ। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নেই। যখন ঘুম ভাঙল আমি সিলেট (sylhet) শহরে! সকালবেলার শুদ্ধ বাতাস। আমরা সিলেট জিন্দা-বাজারের একটি হোটেলে উঠলাম । ভাইয়া বল ১ ঘণ্টা রেস্ট নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হবো সবাই।
বিশ্রাম এবং নাস্তা শেষে বের হলাম মালনীছড়ার (malnicherra tea estate) উদ্দেশ্যে। অনেকগুলো প্রবেশদ্বার চা বাগানের, কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঢোকা উচিত তাই ভাইয়া তাদের সাথে কথা বলে নিলেন।
রাতের ভ্রমণ। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নেই। যখন ঘুম ভাঙল আমি সিলেট (sylhet) শহরে! সকালবেলার শুদ্ধ বাতাস। আমরা সিলেট জিন্দা-বাজারের একটি হোটেলে উঠলাম । ভাইয়া বল ১ ঘণ্টা রেস্ট নিয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হবো সবাই।
বিশ্রাম এবং নাস্তা শেষে বের হলাম মালনীছড়ার (malnicherra tea estate) উদ্দেশ্যে। অনেকগুলো প্রবেশদ্বার চা বাগানের, কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঢোকা উচিত তাই ভাইয়া তাদের সাথে কথা বলে নিলেন।
চা বাগানে ঢুকে তো চোখ ছানাবড়া। মনে হচ্ছিল যেন কোনো দক্ষ চিত্র শিল্পী অয়েল পেইন্ট করেছে । উঁচু-নিচু টিলা এবং টিলাঘেরা সমতলে সবুজের চাষাবাদ। শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঝে মাঝে টিলা বেষ্টিত ছোট ছোট জনপদ। পাহাড়ের কিনার ঘেঁষে ছুটে গেছে আঁকাবাঁকা মেঠো-পথ। কোন যান্ত্রিক দূষণ নেই। কোথাও আবার ধাবমান পথে ছুটে চলছে রূপালী ঝর্ণাধারা। প্রকৃতির সকল সৌন্দর্যের সম্মিলন যেন এখানে। এমন অন্তহীন সৌন্দর্যে একাকার হয়ে আছে সিলেটের চা বাগান। এজন্যই সিলেটের চা বাগানের খ্যাতি রয়েছে সারা বিশ্বজুড়ে।
দেশের মোট চায়ের ৯০ শতাংশই উৎপন্ন হয় সিলেটে। এজন্য সিলেটকে (sylhet) দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশও বলা হয়। এখন আপুকে ও খুশি খুশি দেখাচ্ছে। উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন চা বাগান সিলেট সদর উপজেলায় মধ্যেই বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা বাগান। যার নাম ‘মালনীছড়া চা বাগান (malnicherra tea estate) তার সৌন্দর্য উপেক্ষা করে এমন বুকের পাটা কারো নেই । এই বাগানের পাশেই আলি বাহার নামে আরো একটি চা বাগান রয়েছে। বর্তমানে চা এর পাশাপাশি এখানে কমলা ও রাবারের চাষ ও শুরু হয়েছে। এই বাগানই অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের উপায়।
আদিবাসী মেয়ে ও মহিলারা কাঁধে ঝুড়ি নিয়ে চলেছে চা পাতা তুলতে। তাদের কাছে গিয়ে আমি ও চেষ্টা করলাম চা পাতা তোলার। বেশ কঠিন কিন্তু ওরা কত সহজেই করে ফেলছে এই কাজ। পুরো চা বাগান ঘুরে ঘুরে দেখার পর ফিরে এলাম হোটেলে। সেই স্মৃতি আজও অমলিন।